বাংলার সকাল ডেস্ক : ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর। কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জয় তুলে নিতে এবার চিন্তাভাবনায় স্পষ্টতা আনতে চান কোচ। মিডফিল্ডে পরিবর্তনের আভাস দিয়েছেন কাবরেরা। সেই পরিবর্তনের কেন্দ্রে রয়েছেন—সমিত সোম।ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে নিজের পছন্দের খেলোয়াড়দের নামিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। সমালোচনা হয়েছিল তার দল নির্বাচন ও ফর্মেশন নিয়ে। ভুটানের বিপক্ষে তাই স্টার্টিং একাদশে ফিরেছিলেন ফ্যান-ফেভারিটরা। সুযোগ পেয়েছিলেন ফাহামেদুল, কাজেম শাহ, তাজউদ্দিন এবং ইংল্যান্ডে জন্ম নেয়া হামজা চৌধুরী। ফলও মিলেছে—প্রস্তুতি ম্যাচে সহজ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
কিন্তু আজকের (মঙ্গলবার) চ্যালেঞ্জ একেবারেই ভিন্ন।কানাডার ক্লাব ক্যাভালরি এফসি’র মিডফিল্ডার সমিত মূলত খেলেন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডে। ‘ডাবল পিভট’ পজিশনে খেলতে স্বচ্ছন্দ এই ক্যানাডিয়ান-বাংলাদেশি। হামজার সঙ্গে জুটি বেঁধে মাঝমাঠের ভার সামলাতে দেখা যেতে পারে তাকে। ফলে ভুটানের বিপক্ষে গোল করা সোহেল রানা হয়তো জায়গা হারাবেন আজকের ম্যাচে। যদিও সোহেলের অভিজ্ঞতা এবং গতির ব্যবহার করতে হলে, অন্য কোন পজিশনে তাকে ভেবেও দেখা যেতে পারে।
এখানেই শেষ নয়, পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগতে পারে আরও কয়েকটি জায়গায়। সবচেয়ে আলোচিত নাম— জামাল ভূঁইয়া। অধিনায়ক হলেও, ফরমেশনের কারণে স্টার্টিং লাইনআপে জায়গা পাওয়া কঠিনন জামালের। ভুটানের বিপক্ষে অ্যাসিস্ট করলেও বাদ পড়ার শঙ্কায় আছেন তিনি। জামালের জায়গায় আজ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে দেখা যেতে পারে তরুণ মোরসালিনকে। ছন্দে থাকা এই মিডফিল্ডার তার মুভমেন্ট ও ভিশন দিয়ে প্রতিপক্ষকে ব্যাকফুটে নিতে পারেন।
কাবরেরা তার পছন্দের ৪-৩-২-১ ফর্মেশনেই দল সাজাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ম্যাচ পরিস্থিতি বিবেচনায় বদল আসতেও পারে ফর্মেশনে। সে ক্ষেত্রে রাকিব হোসেনকে সেন্টার ফরোয়ার্ড থেকে সরিয়ে লেফট উইংয়ে খেলাতে পারেন কোচ, আর নাম্বার নাইন হিসেবে দেখা যেতে পারে আল-আমিনকে। তখন মিডফিল্ডে একসাথে জায়গা হতে পারে সোহেল, সমিত আর হামজার।তবে যাই হোক, আজকের ম্যাচে মূল পরীক্ষাটা হবে বাংলাদেশের মিডফিল্ড ও রক্ষণভাগে। কাবরেরা জানেন, ম্যাচ জিততে হলে ডিফেন্সে কোনো খামতি রাখা যাবে না। নিজেদের বক্সের কাছাকাছি অপ্রয়োজনীয় ফাউল কিংবা কর্নার থেকে ভুল মার্কিং—এসব থেকে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে সিঙ্গাপুরের মতো ছন্দে থাকা ও দ্রুতগামী ফরোয়ার্ডদের সামনে ভুল করলে শাস্তি পেতেই হবে। সোমবার (৯ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে ম্যাচ–পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে জামাল বলেন, ‘দশজন মানুষ থাকলে যে চাপ, ২০ হাজার মানুষ থাকলেও একই চাপ থাকবে। আমাদের কাজ পারফর্ম করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘কতজন মানুষ ম্যাচটা দেখবে, সেটা কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়। দিন শেষে দেশের জন্য জয়টাই লাগবে আমাদের। হ্যাঁ, এটা ঠিক, চাপ এবং এই উত্তেজনাটা আমরা অনুভব করি। কিন্তু খেলার সময় আমাদের চিন্তা থাকবে কীভাবে ম্যাচটা জেতা যায়।’
একদিকে হামজা-শমিতদের আগমনে ফুটবলে দিনবদলের হাওয়া। আরেক দিকে প্রায় ৫৫ মাস পর জাতীয় স্টেডিয়ামে কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ। সব মিলিয়ে সিঙ্গাপুর ম্যাচটা কদিন ধরেই মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রে। যার প্রভাব ম্যাচের টিকিটেও কমবেশি পড়ে। রাতারাতি ১৮ হাজার ৩০০ টিকিট বিক্রি হয়ে যায়। এখনো অনেকে ফুটবলপ্রেমী টিকিটের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন। যাঁরা ঢাকায় খেলা দেখতে পারবেন না, তাদের জন্য দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে জায়ান্ট স্ক্রিনের ব্যবস্থা থাকবে। এমন একটা ম্যাচ নিয়ে সাধারণত স্বাগতিক ফুটবলারদের চাপ অনুভব করাই স্বাভাবিক। জামাল সেটা মানলেও মাঠে তাঁর কাছে জয়টাই মুখ্য, ‘কতজন মানুষ ম্যাচটা দেখবে, সেটা কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়। দিন শেষে দেশের জন্য জয়টাই লাগবে আমাদের। হ্যাঁ, এটা ঠিক, চাপ এবং এই উত্তেজনাটা আমরা অনুভব করি। কিন্তু খেলার সময় আমাদের চিন্তা থাকবে কীভাবে ম্যাচটা জেতা যায়।’