ষ্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগের দোসরদের বাদ দিয়ে পরীক্ষিত ত্যাগী নেতা-কর্মীদের দিয়ে নতুন করে রাজশাহী মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনের দাবীতে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজশাহী সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বৃষ্টি উপেক্ষা করে মানববন্ধনের হাজার হাজার নেতাকর্মীরা সমবেত হন। সেইসাথে বর্তমান আহবায়ক কমিটির বিরুদ্ধে নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন।
মানববন্ধনে সভাপত্বি করেন বোয়ালিয়া থানা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান পিন্টু। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মতিহার থানা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি আনসার আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন শাহ্ মখ্দুম থানা বিএনপি সাবেক সভাপতি মাসুদ, বোয়ালিয়া থানা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম মিলু, শাহ্ মখ্দুম থানা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন, মতিহার থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খাজদার আলী ও রাজশাহী মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ সুইট।
মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন বোয়ালিয়া থানা বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন দিলদার, ৩০ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাবেক সভাপতি শুকুর আলী, ১নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম রেজা, যুবদল রাজশাহী মহানগরের সাবেক আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বকুল, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মাইনুল হক হারু,বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন বাবলু, যুগ্ম আহ্বায়ক নাজির হাসান, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবেদুর রেজা রিপন, মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রোকসানা বেগম টুকটুকি, মহানগর কৃষক দলের সাবেক সদস্য সচিব গোলাম সাকলায়েন ইকো, মহানগর শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, মহানগর মৎস্যজীবী দলের সভাপতি জাকের আলি শান্তি, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফি সহ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, মহিলা দল, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীবৃন্দ।
উপস্থিত নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান রাজশাহী মহানগর বিএনপি কমিটির মেয়াদ দীর্ঘদিন আগেই শেষ হয়ে গেছে। এ কমিটি গঠন হযেছিলো ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে। একটি আহবায়ক কমিটির মেয়াদ মাত্র তিন মাস। কিন্তু এই কমিটির মেয়াদ প্রায় চার বছর হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত মহানগর কমিটি গঠন করতে পারেনি। শুধু তাই নয় ওই কমিটিতে যারা আছেন আহ্বায়ক থেকে শুরু করে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব সহ অন্যান্যরা আওয়ামী লীগের দোসর। এর একাধিক প্রমাণ রয়েছে। যেগুলো ইতোপুর্বে বিভিন্ন সমাবেশে এবং এই মানববন্ধনে তুলে ধরা হয়েছে।
তারা বলেন, আজকে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলী ঈশা, তাঁর ডেভলপার কোম্পানির বিভিন্ন ভবন তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকারের রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে দিয়ে উদ্বোধন করিয়েছেন। শুধু তাই নয় শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে শোকও দিয়েছেন। এদিকে সদস্য সচিব মামুন- অর-রশিদ মামুন ১৩ নম্বর ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর মমিন এর নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে শুরু করে নির্বাচন শেষ হওয়া পর্যন্ত সকল কাজ তিনি করেছেন। শুধু তাই নয় নির্বাচিত হওয়ার পরে তিনি নিজে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তারা। এই অবস্থায় ঐ নেতারা কিভাবে নিজেদের বিএনপি বলে দাবি করেন।
বক্তারা আরো বলেন, এই মহানগর কমিটি বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে বিএনপি’র কমিটি গঠন করেছেন। সেখানে আওয়ামী লীগের দোসরদের পুনর্বাসন করা হয়েছে। এছাড়াও যারা কখনো ছাত্রদল, যুবদলসহ বিএনপি’র কোন দলেরই সাথে ছিলেন না তাদেরকেও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। অনেকেই রয়েছেন মাদক ব্যবসায়ী ও ভূমিদস্যু। শুধু তাই নয় ওই সকল কথিত নেতারা বিগত ১৭ বছরে কোন আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন না। মহানগর বিএনপি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাদেরকে নেতা বানিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তারা।
তারা আরো বলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সন তিনবারের সফল সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারুণ্যের অহংকার আগামীর রাষ্ট্রনায়ক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্দেশনা দিয়েছেন, যারা আন্দোলন সংগ্রামের সক্রিয় ছিলেন তাদেরকে নিয়ে কমিটি গঠন করার জন্য। কিন্তু রাজশাহী মহানগর আহ্বায়ক কমিটি কোন শক্তির বলে বেগম জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশনা অমান্য করে কমিটি করছেন তা তাদের বোধগম্য নয়। আসলে তারা বিএনপিকে ভালবাসেনা বলে দাবী করেন। তারা এখনো ভিতরে ভিতরে আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছেন বলে উল্লেখ করেন তারা।
তারা আরো বলেন, অনেকেই সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত তাদের নামে মামলা হলেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের এখনো আটক করছে না। দ্রুত ওই সকল সন্ত্রাসীদের আটক করার দাবি জানান তারা। সেই সাথে অনতিবিলম্বে রাজশাহী মহানগর কমিটিসহ বর্তমান কমিটির তৈরি করা সকল কমিটি ভেঙে দিয়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে মহানগর কমিটি গঠন করার দাবি জানান। আর এই দাবি না মানলে আগামীতে রাজশাহীতে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে হুঁমিয়ারী দেন উপস্থিত নেতৃবৃন্দ।