বাংলার সকাল ডেস্ক : শেষ বাঁশি বাজতেই ডাগআউট থেকে মাঠে ঢুকে পড়েন বেঞ্চে থাকা খেলোয়াড়রা। তারা জড়িয়ে ধরেন ম্যাচসেরা সাগরিকাকে। স্মোক ফ্লেয়ার হাতে নিয়ে উৎসব করেন দর্শকরা। ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারকে শূন্যে তুলে আনন্দ করেন আফঈদারা।বাংলাদেশের লাল-সবুজ এবং ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে ল্যাপ অব অনার দেন তিন ম্যাচ পর ফিরেই চার গোল করা সাগরিকা। সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিততে ড্রই যথেষ্ট ছিল বাংলাদেশের জন্য।
কিন্তু অঘোষিত ফাইনালে ড্র নয়, সাগরিকা-ঝলকে নেপালকে উড়িয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। এক সাগরিকার কাছেই হেরে গেছে হিমালয়কন্যারা। সোমবার কিংস অ্যারেনায় অনুষ্ঠিত ম্যাচে হ্যাটট্রিকসহ সাগরিকার চার গোলে নেপালকে ৪-০ ব্যবধানে হারিয়ে সোনালি ট্রফি নিজেদের করে নেন আফঈদা খন্দকাররা।উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে কাল দুপুরে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা দেশে। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে ম্যাচের আগে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন বাংলাদেশ ও নেপালের ফুটবলাররা।
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে তিন ম্যাচ পর ফিরেই জাদুকরী পারফরম্যান্সে দেশকে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রফি এনে দিলেন সাগরিকা। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক ছিল সাগরিকার। পরের ম্যাচে নেপালের বিপক্ষেও এক গোল করেছিলেন।ওই ম্যাচে নেপালের এক ফুটবলারের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে লাল কার্ড দেখে তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। কাল নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরেই ফের জ্বলে উঠলেন সাগরিকা। করলেন হ্যাটট্রিক। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আট গোল সাগরিকার নামের পাশে।
সর্বোচ্চ ১০ গোল করেছেন নেপালের পূর্ণিমা রায়। ওই তিন ম্যাচ খেলতে পারলে সোনালি বুটও জিততে পারতেন সাগরিকা। পাঁচ ম্যাচ পর মূল ভেন্যু কিংস অ্যারেনায় ফিরল টুর্নামেন্ট। নেপালের বিপক্ষে সাগরিকা-আফঈদা খন্দকারদের অঘোষিত ফাইনাল ম্যাচ দেখতে হাজার হাজার দর্শক মাঠে আসেন। সাগরিকার একের পর এক গোলে তারা উল্লাস করেছেন।ম্যাচের আট মিনিটে প্রথম গোল সাগরিকার। আগের তিন ম্যাচ খেলতে না পারার শোধই যেন নিলেন নেপালের বিপক্ষে। মিডফিল্ড থেকে এক ডিফেন্স চেরা পাসে বল পান সাগরিকা। নেপালের ডিফেন্ডারদের পেছনে ফেলে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এগিয়ে যান বাংলাদেশের এই ফরোয়ার্ড।
নেপালের গোলকিপার সুজাতা তামাং বক্সের বাইরে এসে তাকে আটকাতে পারেননি। প্লেসিং শটে সাগরিকা বল জালে জড়ান (১-০)। ৫১ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সাগরিকা (২-০)। মিনিটসাতেক পর সতীর্থের কাছ থেকে লং পাসে বল পেয়ে সামনে এগিয়ে যান সাগরিকা। গোলকিপার সুজাতাও এগিয়ে আসেন। কিন্তু গোলকিপারের মাথার ওপর দিয়ে বল জালে জড়ান বুদ্ধিদীপ্ত সাগরিকা (৩-০)।সেই সঙ্গে টুর্নামেন্টে নিজের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিকও পূর্ণ করেন তিনি। ৭১ মিনিটে সাগরিকার আরেকটি গোল বাতিল হয় অফসাইডে। ৭৭ মিনিটেও ফের সাগরিকা-ঝলক। মুনকি আক্তারের ক্রসে পাওয়া বল নিয়ে অসাধারণ এক শটে গোল করেন তিনি (৪-০)।
একনজরে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ
চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ (১৮ পয়েন্ট)
রানার্সআপ নেপাল (১২ পয়েন্ট)
ফেয়ার প্লে শ্রীলংকা
সেরা গোলকিপার মিলি আক্তার (বাংলাদেশ)
টুর্নামেন্টসেরা মোসাম্মাত সাগরিকা (বাংলাদেশ)
সর্বোচ্চ গোলদাতা পূর্ণিমা রায় (১০ গোল-নেপাল)