DhakaWednesday , 20 August 2025
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ই-পেপার
  5. খেলাধুলা
  6. জাতীয়
  7. তথ্যপ্রযুক্তি
  8. ধর্ম
  9. ফিচার
  10. বিনোদন
  11. ব্যবসা-বাণিজ্য
  12. মহিলা অঙ্গন
  13. রাজনীতি
  14. রাজশাহী
  15. শিক্ষা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

যত চ্যালেঞ্জিংই হোক, সুস্থ-সবল প্রজন্ম গড়ে তুলতেই হবে : প্রধান উপদেষ্টা

Link Copied!

জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে হলে দক্ষ ও কর্মক্ষম মানবসম্পদ দরকার বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।তিনি বলেছেন, দক্ষ ও কর্মক্ষম মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে না পারলে ব্যক্তিগত জীবন থেকে জাতীয় উন্নয়ন- কোনোটাই যথাযথভাবে করা যাবে না। তাই যে কোনো পরিস্থিতিতেই হোক না কেন এবং যত চ্যালেঞ্জিংই হোক না কেন, আমাদের সুস্থ-সবল প্রজন্ম গড়ে তুলতেই হবে। এজন্য সরকারি, বেসরকারি, সুশীল সমাজ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা- সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ, সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন। কেবল পারস্পরিক অংশীদারত্বের মাধ্যমেই এটা সম্ভব।

বুধবার (২০ আগস্ট) বেলা ১১টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে নিজ কার্যালয়ের শাপলা হলে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে ৩৫টি মন্ত্রণালয়ের যৌথ ঘোষণাপত্র স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই অসংক্রামক রোগ দিনদিন বিস্তৃত হচ্ছে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক, ভৌগোলিক অবস্থান এবং বিপুল জনগোষ্ঠীর ছোট এলাকায় বসবাসের প্রেক্ষাপটে এ পরিস্থিতি আরও সংকটময়। তাই এটি জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক, যা শুধু স্বাস্থ্যখাত নয়, আমাদের সামগ্রিক অর্থনীতি, সামাজিক নিরাপত্তা এবং টেকসই উন্নয়নের সঙ্গেও নিবিড়ভাবে জড়িত।

তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২২ সালের প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর শতকরা ৭১ ভাগ ঘটে থাকে অসংক্রামক রোগের কারণে এবং এর মধ্যে শতকরা ৫১ ভাগ মানুষের মৃত্যু হয় ৭০ বছর বয়সের নিচে, যাকে আমরা অকালমৃত্যু হিসেবে বিবেচনা করে থাকি। আমাদের ব্যক্তিগত চিকিৎসা ব্যয় (আউট অব পকেট এক্সপেন্ডিচার) ৬৯ শতাংশ, যার বেশির ভাগ অসংক্রামক রোগের জন্য ব্যয় হয়।অসংক্রামক রোগ হলে মানুষ উচ্চ চিকিৎসা ব্যয়ের মুখোমুখি হতে বাধ্য হয় জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কোনো ব্যক্তির ক্যানসার হলে তার পরিবারকে আর্থিক ক্ষমতার সর্বোচ্চ প্রয়োগ করতে হয় এবং প্রায় ক্ষেত্রেই সহায়হীন-সম্বলহীন হয়ে পড়ে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে অতি উচ্চমূল্যে চিকিৎসা নেওয়ারও প্রয়োজন হয়। এসব রোগের চিকিৎসাব্যয় মেটাতে আমাদের বিপুল অঙ্কের টাকা চলে যায় বিদেশে।

‘তাই অসংক্রামক রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা যেমন উন্নত হওয়া জরুরি, তেমনি রোগগুলো যেন কম হয় অথবা না হয়, সেজন্য উপযুক্ত জনসচেতনতা এবং প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা করে তোলা দরকার। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের একার পক্ষে এটা সম্ভব নয়। এজন্য সব মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা দরকার। খাদ্য, কৃষি, শিক্ষা, ক্রীড়া, স্থানীয় সরকার, গণপূর্ত এমন প্রত্যেকটি খাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। প্রত্যেক খাত থেকে দরকার সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা ও নিবিড় উদ্যোগ। তাই এসব মন্ত্রণালয় চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদের করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে।’—যোগ করেন তিনি।

‘যৌথ ঘোষণা’ বাস্তবায়নে কয়েকটি বিষয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, প্রথমত: জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামকগুলোর বিষয়ে আমাদের যথেষ্ট পরিমাণ সচেতনতা আছে এ কথা জোর দিয়ে বলা যায় না। অনেকেই সচেতন থাকলেও জীবন যাপনে হয়ত সেভাবে প্রতিফলন নেই। ফলে নানামাত্রিক শারীরিক ও মানসিক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে এবং দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন অগ্রগতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। যেমন- তরুণদের মধ্যে অনেকে একইসাথে পুষ্টিহীনতায় ভুগছে, আবার অতিরিক্ত ওজন নিয়ে শারীরিক ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতেও রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তামাকের বিরুদ্ধে তরুণ সমাজকে আজ সচেতন করা না গেলে আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এর পাশাপাশি, স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ জরুরি ভিত্তিতে মানুষকে সচেতন করতে হবে। জাতীয় নীতিগুলো এমনভাবে প্রণয়ন করতে হবে যেন সেগুলো স্বাস্থ্যবান্ধব হয়; অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হয়; শিশু, কিশোর ও নারী স্বাস্থ্য যেন বিশেষ অগ্রাধিকার পায়; নাগরিক সমাজ ও যুব শক্তি যেন সচেতনতা কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে পারে।তিনি বলেন, সুবিস্তৃত জনসচেতনতা ও সব স্তরে স্বাস্থ্যবান্ধব নীতি-কৌশল গ্রহণ হতে পারে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে বড় হাতিয়ার। তাই স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন ও দায়িত্বশীল নাগরিক আচরণ প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নিতে হবে। এটিকে সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করতে হবে।

দ্বিতীয়ত: ‘যৌথ ঘোষণা’ বাস্তবায়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক কারিগরি সহযোগিতা দরকার। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেল প্রয়োগ করে এ সংক্রান্ত উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে ‘যৌথ ঘোষণা’ বাস্তবায়ন সহজ হবে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করবে। স্বাক্ষরকারী মন্ত্রণালয়গুলো সহযোগিতা করবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রয়োজনীয় সাপোর্ট দেবে বলে প্রধান উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।তৃতীয়ত: যে কোনো কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নিবিড় মনিটরিং ও মূল্যায়ন আবশ্যক। আবার এগুলো বাস্তবায়ন করতে উপযুক্ত ও দক্ষ জনবল, আর্থিক বরাদ্দ দরকার।বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় বিশেষ কোনো সীমাবদ্ধতা বা চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি না হয় সেজন্য ‘যৌথ ঘোষণা’ বাস্তবায়নের কাজটি বিশেষ অগ্রাধিকারে রেখে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ ও জনবল নিশ্চিত করতে হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন ।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যৌথ ঘোষণা’ স্বাক্ষরের মাধ্যমে জাতীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আমরা একসঙ্গে কাজ করতে নতুন করে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলাম। এটি শুধু একটি আয়োজনের মধ্যে যেন সীমাবদ্ধ না থাকে।তিনি আরও বলেন, এটি আমাদের সম্মিলিত প্রয়াস। আমি বিশ্বাস করি, এটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে। এটি হবে অগ্রগতির একটি নতুন মাইলফলক। স্বাস্থ্য সম্পর্কিত টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ও এসডিজি পরবর্তী উন্নয়ন এজেন্ডাসমূহ অধিকতর দক্ষতার সঙ্গে অর্জনে সহায়ক হবে।অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশে স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে, বিশেষ করে ৫ আগস্ট পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশ অফিস সত্যিই প্রশংসনীয় ভূমিকা নিয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অঞ্চলের ডিরেক্টর (প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্ট) ড. থাকসাফন থামারাংসি (Dr. Thaksaphon Thamarangsi) অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ায় প্রধান উপদেষ্টা তাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।

কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।